বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে সূফি মিজান-এর ভাবনা

বঙ্গবন্ধু

Image Courtesy : Jugantor

বাঙালী জাতির আশির্বাদ, মৃত্যুঞ্জয়ী নেতা, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সনের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জের টুংগী পাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। স্কুল জীবনেই তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার জাতীয় নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নজরে পড়েন বঙ্গবন্ধু। পরবর্তীতে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে পড়াকালীন সক্রিয়ভাবে তিনি ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং ইংরেজদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ভূমিকা রাখার পাশাপাশি পাক-ভারত স্বাধীনতা আন্দোলনেও তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেছিলেন। যে আশা-আকাংখা নিয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল, সহসাই পশ্চিম-পাকিস্তানীরা পূর্ব-পাকিস্তানের জনগণের সেই আশায় চরম নিরাশা সৃষ্টি করল এবং বাধ্য হয়ে পূর্ব-পাকিস্তানের জনগণ স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনে সংযুক্ত হতে লাগল।

বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারী গঠিত হল ছাত্রলীগ এবং ১৯৪৯ সানের ২৩ই জুন জন্ম হলো মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী একমাত্র রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের। ১৯৫২ সনের ভাষা আন্দোলন, ৫৪-এর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, ৬২-এর ছাত্র আন্দোলন, ৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ-অভ্যূত্থান, ৭০-এর নির্বাচন এবং ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রত্যেক আন্দোলন ও সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নেতৃত্বের আসনে অসীন এক লৌহ মানব, অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব, এক অপরাজেয় জাতীয় মহান নেতা, বাংলার মানুষের একক ও অতুলনীয় কন্ঠস্বর, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এবং বাংলাদেশ অভ্যূদয়ের মহানায়ক, যিনি জীবনের প্রায় ১৩ (তের) বছর জেলখানার অন্ধকার প্রকোষ্টে দিনাতিপাত করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, মানুষের সেবা করা, মানুষের কল্যাণে কাজ করা, দুর্নীতিমুক্ত-সন্ত্রাসমুক্ত-ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্রমুক্ত-সুখী-সমৃদ্ধ-স্বনির্ভর-উন্নত অর্থনীতির সোনার বাংলা গঠন করা এবং সোনার বাংলা গঠনে বঙ্গবন্ধু যখন এগিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনি দেশ-সরকার-জনগণ-স্বাধীনতা-মানবতার শত্রু কতিপয় বিপদগামী লোক এর হাতে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য শাহাদাতবরণ করেন এবং ঐ হায়েনারূপী খুনীদের হাত থেকে রেহাই পায়নি বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ সন্তান শিশু রাসেলও। খুনীরা শুধু বঙ্গবন্ধুকে শহীদ করেনি, তারা বাংলার প্রতিটি মানুষের হৃদয় ভেংগেছে, মর্মাহত করেছে গোটা বাঙালী জাতিকে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনর বাংলা বাস্তবায়নে তৈরি করেছে প্রতিবন্ধকতা।

মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুইজন কন্যা, একজন হলেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্যজন হলেন রত্নগর্ভা শেখ রেহেনা। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে দিবা-রাত্রি নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর নেতৃত্বে দেশ বর্তমানে সর্বসূচকে উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করা হয়েছে, পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রায় শেষের দিকে, মেট্রো রেল-বুলেট ট্রেন-উড়াল সেতু-উন্নত সড়ক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন প্রায় শেষের দিকে, ডিজিটাল কিংবা আইটি-তে ও অনেক দূর এগিয়ে বাংলাদেশ। সর্বোপরি, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সনের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে উন্নীত হবে ইনশা-আল্লাহ। অর্থাৎ, খুব দ্রুতই বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক ও সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রকৃত সোনার বাংলায় রূপান্তরিত হবে।

আলহাজ্ব সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ১৯৪৩ সনের ১২ই মার্চ নারায়নগঞ্জের আড়াই হাজারের কাঞ্চনে জন্ম নেওয়া একজন মহান মানুষ, যিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল এক মহান ব্যক্তিত্ব। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর অধীনে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে সদ্য স্বাধীন দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী হিসেবে ব্যবসা শুরু করেন। অল্প সময়েই ব্যবসায় অভূতপূর্ব সাফল্যের পথ দেখেন তিনি এবং বর্তমানে তাঁর নেতৃত্বে প্রায় ৪০ (চল্লিশ) টি শিল্প প্রতিষ্ঠান নিয়ে “PHP Family” নামে এক বৃহৎ শিল্প গ্রুপ বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল ও সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে। “PHP Family”-এর মাধ্যমে হাজার হাজার বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। বর্তমানে উক্ত কোম্পানী বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিবছর প্রায় হাজার কোটি টাকা কর প্রদান করছে।

ইতোমধ্যে, আলহাজ্ব সূফি মিজান-এর নেতৃত্বে “PHP Family” বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনন্যসাধারণ ভূমিকা রাখায় সূফি মিজানকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি চট্টগ্রামের অহংকার খেতাবে ভূষিত করেন, পাশাপাশি সূফি মিজান বাংলাদেশের অন্যতম সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে স্বীকৃতি পান, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক “Business Award” পান, ভারত সরকার কর্তৃক মাদার তেরেসা অ্যাওয়ার্ড পান এবং পাশাপাশি তিনি এইরূপ দেশী-বিদেশী অনেক “Prestigious Award” অর্জন করেন, যা দেশের ও দেশের মানুষের মর্যাদাকে অনেক উচ্চে নিয়ে গেছে। সূফি মিজান একজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিও বটে, যিনি বাংলাদেশের হত-দরিদ্র মেধাবী সন্তানদের Affordable cost-এ কিংবা বৃত্তি প্রদানপূর্বক বিনা বেতনে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুবিধার্থে ২০০৩ সনে ঢাকাস্থ বারিধারায় প্রতিষ্ঠা করেন “ইউআইটিএস” নামে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়। “ইউআইটিএস” বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হিসেবে ও একজন সফল ব্যক্তি তিনি। তাঁর আমন্ত্রণে “ইউআইটিএস”-এর বিগত তিন (৩) টি সমাবর্তনেই বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি “ইউআইটিএস”-এর আচার্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং ২০০৯ ইং ও ২০১৪ ইং সনসমূহে অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে যথাক্রমে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত এপিজে আবদুল কালাম ও মালয়েশিয়ার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তুন ড. মাহাথির মোহাম্মদ, যা দেশে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল।

সূফি মিজান মনে করেন, তাঁর এই সফলতার নেপথ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার প্রকৃত বাস্তবায়ন এবং প্রকৃতপক্ষে হীরার বাংলায় পরিণত করার দৃঢ় প্রত্যয় কাজ করেছে। বিগত ২০১৮ ইং সনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন “এফবিসিসিআই”-এর এক সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আলহাজ্ব সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে প্রকৃত হীরার বাংলায় পরিণত করার এক আবেদনময়ী, মর্মস্পর্শী, স্বপ্নময়, বাস্তবমূখী, কালজয়ী ও স্মরণীয় সাবলীল-সুন্দর-প্রাঞ্জল বক্তব্য প্রদান করেছিলেন এবং তাঁর বক্তব্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ও উদ্বেলিত করেছিল এবং পাশাপাশি উপস্থিত সবাই তাঁর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। আমরা সবাই প্রত্যাশা করি, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী “মুজিব বর্ষে” যদি বাঙ্গালী জাতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি সম্পূর্ণরূপে আস্থাশীল হয়ে কাজ করে, তাহলে, অনতিবিলম্বে এই দেশ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রকৃত হীরার বাংলায় রূপান্তরিত হবে।

সূফি মিজান বিশ্বাস করেন

“Divine blessing, mixed with hard work, backed by good intentions can make miracle”.

আমরা সবাই যদি সূফি মিজানের এই ভাবনায় কিংবা মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে মিলেমিশে কাজ করি, তাহলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস খুব অল্প সময়ের ব্যবধানেই সূফি মিজান-এর ভাবনা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রকৃতপক্ষে হীরার বাংলায় রূপ নেবে ইনশাআল্লাহ। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় অপেক্ষমান পুরো বাঙালী জাতি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হইক।

Author

– ড. মো: আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments